পিয়ের ক্যুরি
পিয়ের ক্যুরি | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৯ এপ্রিল ১৯০৬ | (বয়স ৪৬)
জাতীয়তা | ফরাসি |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | তেজস্ক্রিয়তা ক্যুরির সূত্র ক্যুরি-ভাইস সূত্র ক্যুরি ধ্রুবক ক্যুরি তাপমাত্রা পাইজোইলেক্ট্রিসিটি আবিষ্কার |
দাম্পত্য সঙ্গী | মারিয়া স্ক্লদভ্স্কা ক্যুরি (বি. ১৮৯৫) |
সন্তান | ইরেন জোলিও-ক্যুরি ইভ কুরি |
পুরস্কার | পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার[ক] (১৯০৩) ডেভি পদক (১৯০৩) মাতেউচি পদক (১৯০৪) এলিয়ট ক্রেসন পদক (১৯০৯) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | গাব্রিয়েল লিপম্যান |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | পল ল্যাঙ্গভিন অঁদ্রে-লুই দ্যবিয়ের্ন মার্গুয়েরাইট ক্যাথারিন পেরে |
স্বাক্ষর | |
পিয়ের ক্যুরি[টীকা ১] (ফরাসি: Pierre Curie) (১৫ই মে, ১৮৫৯ - ১৯শে এপ্রিল, ১৯০৬) একজন ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন। তাঁকে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯০৩ সালে তিনি তার স্ত্রী মারি ক্যুরি ও ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী অঁরি বেক্যরেলের সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। তেজস্ক্রিয়তা সংক্রান্ত গবেষণায় রেডিয়াম ও পোলোনিয়াম নামক দুইটি মৌলিক পদার্থ আবিষ্কারের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁদেরকে এই সম্মান প্রদান করা হয়।
জীবন
[সম্পাদনা]পিয়ের ক্যুরি ১৮৫৯ সালের ১৫ই মে তারিখে ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল ওজেন ক্যুরি ও মায়ের নাম ছিল সোফি-ক্লের ক্যুরি। ওজেন ক্যুরি ছিলেন একজন চিকিৎসক; তার কাছ থেকেই পিয়ের প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ছোটবেলাতেই পিয়ের গণিতে, বিশেষ করে স্থানিক জ্যামিতিতে দক্ষতা প্রদর্শন করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৮ বছর বয়সে গণিতে স্নাতক উপাধি লাভ করেন।[১]
১৮৭৮ সালে পিয়ের প্যারিসের সর্বন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি তাপীয় তরঙ্গসমূহের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের গণনা সংক্রান্ত গবেষণাকর্ম সম্পাদন করেন। এরপর তিনি তার অগ্রজ জাক ক্যুরির সহায়তায় কেলাসসমূহের উপরে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম সম্পাদন করেন। তারা পিয়েৎসোবিদ্যুৎ নামক ধারণাটি আবিষ্কার করেন, যা ছিল যান্ত্রিক চাপের অধীন কেলাসের ভিতরে বৈদ্যুতিক বিভব। এই ক্রিয়াটি পরবর্তীতে বহু ব্যবহারিক যন্ত্রপাতিতে প্রয়োগ করা হয়, যাদের মধ্যে মাইক্রোফোন অন্যতম। এর পরে পিয়ের ক্যুরি কেলাসসমূহের প্রতিসাম্য মূলনীতিটি সূত্রায়িত করেন, যাতে একটি বিশেষ ন্যূনতম অপ্রতিসাম্যের অভাবযুক্ত পরিবেশে একটি বিশেষ ভৌত প্রক্রিয়া সম্পাদন করার অসম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
১৮৮২ সালে পিয়ের ক্যুরিকে প্যারিসের শিল্প পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নশাস্ত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবীক্ষক নিযুক্ত করা হয়। সেখানে তিনি চুম্বকত্বের উপর গবেষণা করেন, যা বর্তমানে সুপরিচিত। পরীক্ষণের সুবিধার জন্য তিনি একটি সুবেদী পরিমাপ যন্ত্র নির্মাণ করেন, যার নাম ব্যাবর্ত-তুলা (Torsion balance)। এই তুলা বা নিক্তিটি বর্তমানে ক্যুরি তুলা বা ক্যুরি নিক্তি হিসেবে পরিচিত এবং আজও এটি ব্যবহার করা হয়। চুম্বকত্বের গবেষণায় ক্যুরি আবিষ্কার করেন যে চুম্বক পদার্থগুলি একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পৌঁছালে তাদের চৌম্বক ধর্মের পরিবর্তন ঘটে; এই তাপমাত্রাটিকে ক্যুরি বিন্দু নামে ডাকা হয়।
১৮৯৪ সালে পিয়ের ক্যুরি পোলীয় বিজ্ঞানী মারিয়া সালোমেয়া স্ক্লদোভ্স্কা নামক একজন গবেষণা সহকারীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। তারা এক বছর পরে ১৮৯৫ সালের ২৫শে জুলাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মারিয়া নিজের নাম বদলে মারি ক্যুরি নামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৮৯৬ সালে ফরাসি বিজ্ঞানী অঁরি বেক্যরেল তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের পরে পিয়ের ও মারি ক্যুরি এই বিষয়ে আরও গভীর গবেষণা শুরু করেন। ক্যুরি দম্পতি আবিষ্কার করেন যে বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের চেয়ে পিচব্লেন্ড নামক ইউরেনিয়াম অক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজটির তেজস্ক্রিয়তা বেশি। এই খনিজটির উপরে গবেষণা করে তারা ১৮৯৮ সালে প্রথমে পোলোনিয়াম ও পরবর্তীতে রেডিয়াম নামক দুইটি তেজস্ক্রিয় মৌলিক পদার্থ আবিষ্কার করেন। আকরিক থেকে বিশুদ্ধ মৌলগুলি নিষ্কাশন করতে গিয়ে পিয়ের নতুন এই তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলির ভৌত ধর্মের উপরে গবেষণা সম্পাদন করেন, যেমন সেগুলির দীপ্তি ও রাসায়নিক ক্রিয়া। তিনি পরবর্তীতে তিন ধরনের তেজস্ক্রিয় কণার অস্তিত্ব প্রমাণ করেন, যেগুলি বৈদ্যুতিকভাবে ধনাত্মক, ঋণাত্মক ও নিরপেক্ষ প্রকৃতির। পরে ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড এই কণাগুলিকে আলফা, বিটা ও গামা রশ্মি নামকরণ করেন। পিয়ের ক্যুরি পরবর্তীতে রেডিয়ামের শারীরতাত্ত্বিক ক্রিয়া নিয়েও পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ করেন; তার এই কাজ পরবর্তীতে কর্কটরোগ বা ক্যানসারের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ চিকিৎসার উদ্ভাবনে ব্যবহৃত হয়েছে।
১৮৯৫ সালে পিয়ের ক্যুরি বিজ্ঞানে ডক্টরেট উপাধি অর্জন করেন। ১৯০০ সালে তিনি সর্বন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ও ১৯০৪ সালে অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন ১৯০৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের পাশাপাশি মারি ক্যুরির সাথে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রয়্যাল সোসাইটির ডেভি পদক লাভ করেন। ১৯০৫ সালে তাঁকে ফরাসি বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্যপদে নির্বাচিত করা হয়।
১৯০৬ সালে প্যারিসের একটি সড়কে একটি ঘোড়ায় টানা গাড়ির নিচে চাপা পড়ে পিয়ের ক্যুরি তৎক্ষণাৎ মৃত্যুবরণ করেন।
১৯০৮ সালে মৃত্যুর ২ বছর পরে তার রচনাসমগ্র প্রকাশিত হয়।
পাদটীকা
[সম্পাদনা]- ↑ এই ফরাসি ব্যক্তিনামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ফরাসি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ-এ ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Quinn, Susan (১৯৯৬)। Marie Curie : a life। Reading, Mass.: Addison-Wesley। আইএসবিএন 978-0201887945।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Pierre Curie's Nobel prize ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে
- Official Nobel biography ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে
- Nobel article about Marie Curie ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ আগস্ট ২০০৪ তারিখে
- Biography American Institute of Physics ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে
- Annotated bibliography for Pierre Curie from the Alsos Digital Library for Nuclear Issues
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref>
ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/>
ট্যাগ পাওয়া যায়নি
- ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী
- ১৮৫৯-এ জন্ম
- ১৯০৬-এ মৃত্যু
- নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী
- এলিয়ট ক্রেসন পদক বিজয়ী
- রাসায়নিক মৌল আবিষ্কারক
- ফরাসি নোবেল বিজয়ী
- ফরাসি নাস্তিক
- ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য
- ফ্রান্সে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু
- প্যারিসের বিজ্ঞানী
- প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- মাতেউচি পদক বিজয়ী
- ১৯শ শতাব্দীর নাস্তিক
- ২০শ শতাব্দীর নাস্তিক
- Pages with reference errors that trigger visual diffs